ইউরিক অ্যাসিড কমানোর উপায়
ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য কিছু জীবনধারা পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি। নিচে ইউরিক অ্যাসিড কমানোর কয়েকটি উপায় উল্লেখ করা হলো:
১. সঠিক খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা:
পুরিনসমৃদ্ধ খাবার কমানো: পুরিন বেশি থাকলে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। উচ্চ পুরিনযুক্ত খাবার, যেমন রেড মিট, অর্গান মিট (যেমন লিভার), শেলফিশ, স্যাডিন, মাশরুম এবং কিছু লেগুমস এড়িয়ে চলুন।
কম ফ্যাটযুক্ত খাবার বেছে নিন: ফ্যাটযুক্ত খাবার যেমন পূর্ণ ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য, ফ্রায়েড ফুড এবং প্রসেসড ফুড পরিহার করুন। এগুলো ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে।
চিনি এবং ফ্রুকটোজ কমানো: সোডা, মিষ্টি পানীয়, এবং উচ্চ ফ্রুকটোজযুক্ত খাবার যেমন কিছু ফাস্টফুড এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
বেশি ফল এবং সবজি খাওয়া: আলু, সবুজ শাকসবজি, চেরি, এবং অন্যান্য কম পিউরিনসমৃদ্ধ ফল ও সবজি বেশি পরিমাণে খাওয়া ভালো।
২. যথেষ্ট পানি পান করা:
পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বেশি পানি পান করলে ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যেতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করা:
অতিরিক্ত ওজন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম করে এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন।
৪. মদ্যপান কমানো:
বিশেষ করে বিয়ার এবং অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়, তাই মদ্যপান কমিয়ে দিন বা সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলুন।
৫. ভিটামিন সি:
ভিটামিন সি ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। লেবু, কমলা, ব্রকলি, এবং অন্যান্য সাইট্রাস ফলের মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
৬. দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য:
কম ফ্যাটযুক্ত দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
৭. কফি:
গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কম পরিমাণ কফি পান করলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমতে পারে। তবে কফি পান করার আগে আপনার স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৮. চিকিৎসকের পরামর্শ:
যদি জীবনধারা পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক প্রয়োজনে ওষুধ নির্ধারণ করতে পারেন যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করবে।
এই পরামর্শগুলো মেনে চললে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব, যা গাউট এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সমস্যার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।